স্নায়ু টিস্যু কী? স্নায়ুকোষ বা নিউরনের গঠন !
স্নায়ু টিস্যু (Nerve tissue)
স্নায়ু টিস্যু শব্দটা তোমাদের কাছে ততটা নতুন নয়। এটা সম্পর্কে তোমরা প্রায় বেশিরভাগই জানো।
যে টিস্যু বা কলা দেহের সব ধরনের সংবেদন এবং উদ্দীপনা গ্রহন করে এবং তা পরিবহনের মাধ্যমে উদ্দীপনা অনুসারে উপযুক্ত প্রতিবেদন সৃষ্টি করে, সেটাই স্নায়ু টিস্যু বা স্নায়ু কলা। বহুসংখ্যক স্নায়ুকোষ বা নিউরনের সমন্বয়ে স্নায়ুটিস্যু গঠিত। নিউরনই স্নায়ুতন্ত্রের গঠন এবং কার্যক্রমের একক। তাই নিউরনের গঠন নিয়ে এবার একটু আলোচনা করা যাক।
নিউরনের গঠনঃ
প্রতিটি নিউরন দুইটি অংশ নিয়ে গঠিত। যথাঃ
১. কোষদেহ।
২. প্রলম্বিত অংশ।
এখন মনে হয় সবার মনেই একটু কৌতূহলতা সৃষ্টি হয়েছে। যে আসলে কোষদেহ আর প্রলম্বিত অংশ আবার কি? কোথা থেকে এলো এরা। তাহলে এবার কোষদেহ আর প্রলম্বিত অংশ সম্পর্কে কিছু জানা যাক।
১. কোষদেহ (Cell body): প্লাজমামেমব্রেন, সাইটোপ্লাজম আর নিউক্লিয়াস নিয়ে গঠিত নিউরনের গোলাকার, তারকাকার অথবা ডিম্বাকার অংশ কোষদেহ নামে পরিচিত। এখানে সাইটোপ্লাজম, মাইটোকন্ড্রিয়া, গলজিবস্তু, লাইসোজোম, চর্বি, গ্লাইকোজেন, রঞ্জক কণা শাহ অসংখ্য নিল দানা থাকে।
২. প্রলম্বিত অংশ (): কোষদেহের পরই এই অংশের অবস্থান। কোষদেহ থেকে কিছু শাখা-প্রশাখার সৃষ্টি হয়। কোষদেহ থেকে সৃষ্ট এই শাখা-প্রশাখাকেই প্রলম্বিত অংশ বলে।
এতক্ষণ স্নায়ুকোষের প্রকারভেদ দেখেছো তোমরা। এখন স্নায়ুকোষের অংশের প্রকারভেদ সম্পর্কে জানতে পারবে।
একটু আগে যে প্রলম্বিত অংশ সম্পর্কে জানলে সেটা কিন্তু আবার দুই ধরনের হয়ে থাকে।
i) ডেনড্রন (Dendron): কোষদেহের চারদিকের শাখাযুক্ত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রলম্বিত অংশকে ডেনড্রন বলে। ডেনড্রন থেকে আবার যে শাখা বের হয় তাকে ডেনড্রাইট বলে। একটি নিউরনে ডেনড্রন সংখ্যা শূন্য থেকে শতাধিক পর্যন্ত হতে পারে। ডেনড্রাইট অন্য নিউরন থেকে স্নায়ু তাড়না গ্রহন করে।
i) অ্যাক্সন (Axon): কোষদেহ থেকে উৎপন্ন বেশ লম্বা তন্তুটির নাম অ্যাক্সন। এর চারদিকে একধরনের পাতলা আবরণ থাকে। এই পাতলা আবরণটিকে নিউরিলেমা (Neurolemma) বলে। নিউরিলেমা এবং অ্যাক্সনের মধ্যবর্তী অঞ্চলে স্নেহ পদার্থের একটি স্তর থাকে। একে মায়েলিন (Myelin) বলে। নিউরিলেমা আবরণটি অবিচ্ছিন্ন নয়। নির্দিষ্ট দূরত্ব পর পর এটি সাধারণত বিচ্ছিন্ন অবস্থায় থাকে। শুধু এই বিচ্ছিন্ন অংশে নিউরিলেমার সাথে অ্যাক্সনের প্রত্যক্ষ সংস্পর্শ ঘটে। এই আবরণহীন অংশগুলো রেনভিয়ারের পর্ব (Node of Ranvier) নামে পরিচিত। অ্যাক্সনের মূল অক্ষের আবরণীকে অ্যাক্সলেমা (Axolema) বলে।
আচ্ছা নিউরনের গঠনতো এবার জানা হলো। এবার আরেকটু বলি।
এরকম অসংখ্য নিউরন যুক্ত হয়েই স্নায়ুটিস্যু বা স্নায়ুকলা গঠন করে। অবশ্য এটা সবার প্রথমেই বলা হয়েছে। আবার মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য লেখলাম।
আশা করি স্নায়ুটিস্যু বা স্নায়ুকলা, নিউরনের গঠন এগুলো সম্পর্কে জানার পিপাসা তোমাদের অনেকটাই মিটেছে। তারপরও কিছু জানতে চাইলে কমেন্ট করতে পারো।
আমি উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব।
No comments